Thursday, November 20, 2025

দীর্ঘ ৪৪ বছর পর চাকসুর নেতৃত্বে শিবির

আরও পড়ুন

দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থীরা ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

 

আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

 

চাকসুতে বিজয়ী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. ইব্রাহিম হোসেন (বাঁয়ে) ও জিএস সাঈদ বিন হাবিব

চাকসুতে বিজয়ী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. ইব্রাহিম হোসেন (বাঁয়ে) ও জিএস সাঈদ বিন হাবিবছবি: জুয়েল শীল

ভিপি (সহসভাপতি) পদে ছাত্রশিবিরের মো. ইব্রাহিম হোসেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের এমফিলের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।

 

জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

আরও পড়ুনঃ  ১৪ বছর পর বাসায় ফিরে প্রিয়তমা স্ত্রীর সাক্ষাৎ পাবেন না আজহার ভাই: সিরাজুল ইসলাম

 

এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান

এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের আইয়ুবুর রহমানছবি: সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন ফলাফল ঘোষণার সময় বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটাররা নির্বাচনে অসাধারণ উৎসবমুখর অংশগ্রহণ করেছেন

 

চাকসুতে ২৬টি পদে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান। তিনি এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোছন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। এ ছাড়া সহ খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জিতেছেন তামান্না মাহবুব নামের এক স্বতন্ত্র প্রার্থী।

আরও পড়ুনঃ  নারী শিক্ষার্থীকে লাথি, যা বলছে ছাত্রশিবির

 

চাকসু নির্বাচনে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা হয়। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবর

চাকসু নির্বাচনে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা হয়। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবরছবি: সৌরভ দাশ

চাকসু নির্বাচনে শিবিরের সর্বশেষ জয় এসেছিল ১৯৮১ সালে। ওই নির্বাচনে ভিপি হন জসিম উদ্দিন সরকার আর জিএস হন আবদুল গাফফার। দুজনই ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন নেতা।

 

এরপর দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও শিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা সেই নেতৃত্বের আসনে ফিরলেন।

 

দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে ফিরে আসা

ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন

ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইনছবি: প্রথম আলো

আশির দশক থেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের আমলে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ হারায় সংগঠনটি।

 

এরপর প্রায় এক দশকের নীরবতা কাটিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আবার প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফেরে ছাত্রশিবির। তাদের এই প্রত্যাবর্তনের এক বছর না যেতেই চাকসু নির্বাচনে এমন বিজয় ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  হাসিনার গণমাধ্যমে প্রবেশাধিকার নিয়ে ঢাকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তলব

 

চাকসুর ইতিহাসে ছাত্রশিবিরের দ্বিতীয় জয়

ভোট দেওয়ার পর চলছে আড্ডা

ভোট দেওয়ার পর চলছে আড্ডাছবি: প্রথম আলো

এখন পর্যন্ত চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র সাতবার— ১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং এবার ২০২৫ সালে।

 

১৯৮১ সালের নির্বাচনে ছাত্রশিবির পেয়েছিল প্রথম জয়। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র কাছে হেরে যায় তারা।

 

এরপরের দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচনই হয়নি। বন্ধ ছিল ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম।

 

নতুন প্রজন্মের ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেয়েছে চাকসু। প্রথমবার ভোট দেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি, কিন্তু চাকসুতে দিয়েছি— এটাই আমাদের গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতার শুরু।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ